
পাকিস্তানকে সম্প্রতি একটি কঠোর সতর্কীকরণ জারি করেছে চীন। স্পষ্ট করে জানিয়ে দিয়েছে, যদি ইসলামাবাদ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে তার মাটিতে সামরিক ঘাঁটি স্থাপনের অনুমতি দেয়, তাহলে বেইজিং দেশটির সাথে সমস্ত সম্পর্ক ছিন্ন করতে পারে।
এই সতর্কীকরণ এমন এক সময়ে এসেছে যখন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং পাকিস্তানের মধ্যে কৌশলগত সহযোগিতা গভীর করার বিষয়ে প্রতিবেদন প্রচারিত হচ্ছে। চীন এই ধরনের পদক্ষেপকে কেবল তার নিজস্ব নিরাপত্তার জন্য হুমকি হিসেবেই নয়, বরং তার অর্থনৈতিক ও কৌশলগত স্বার্থের উপর সরাসরি আক্রমণ হিসেবেও দেখে।
সাম্প্রতিক বছরগুলিতে পাকিস্তান এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে উত্তেজনা কমানোর লক্ষণ দেখা গেছে। তবে, নতুন ঘটনাবলী ইঙ্গিত দেয় যে উভয় দেশ আবারও নিরাপত্তা ও সামরিক সহযোগিতা জোরদার করার চেষ্টা করছে। চীন এই সম্ভাব্য জোটকে তার জাতীয় স্বার্থের বিরুদ্ধে বলে মনে করে, বিশেষ করে উচ্চাকাঙ্ক্ষী চীন-পাকিস্তান অর্থনৈতিক করিডোরে (CPEC) তার বহু বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগের কারণে। চীনের জন্য CPEC কেবল বাণিজ্যিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ নয়, বরং এর গুরুত্বপূর্ণ কৌশলগত মূল্যও রয়েছে।
CPEC চীনের বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভ (BRI) এর একটি প্রধান অংশ। এটি পাকিস্তানের গোয়াদর বন্দরের মধ্য দিয়ে যায়। চীন আশঙ্কা করছে, পাকিস্তান যদি মার্কিন সামরিক উপস্থিতির অনুমতি দেয়, তাহলে ওয়াশিংটন BRI প্রকল্পগুলিতে নজরদারি করতে পারে অথবা প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে হস্তক্ষেপ করতে পারে। চীন স্পষ্টভাবে স্পষ্ট করে দিয়েছে যে তারা পাকিস্তানে কোনও ধরণের মার্কিন সামরিক উপস্থিতি সহ্য করবে না।
পাকিস্তানের উপর কূটনৈতিক চাপ বৃদ্ধি
পাকিস্তান এখন নিজেকে কঠিন কূটনৈতিক বাঁধনে খুঁজে পাচ্ছে। একদিকে, তারা চীনের সাথে তার দীর্ঘস্থায়ী "আয়রন ব্রাদারহুড" বজায় রাখতে চায়, অন্যদিকে, তারা তাদের বৃহত্তর বৈদেশিক নীতির এজেন্ডার অংশ হিসাবে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সাথে তার ঐতিহাসিক সম্পর্ক পুনরুজ্জীবিত করতেও চাইছে। তবে দুই পরাশক্তির মধ্যে ক্রমবর্ধমান প্রতিদ্বন্দ্বিতা পাকিস্তানকে এমন এক কোণে ঠেলে দিয়েছে যেখানে তারা পক্ষ বেছে নিতে বাধ্য হতে পারে।
মূলত, চীনের এই চূড়ান্ত ঘোষণা দক্ষিণ এশিয়ার ভূ-রাজনৈতিক দৃশ্যপটকে নতুন করে আকার দেওয়ার সম্ভাবনা রাখে, যা পাকিস্তানকে দুটি প্রতিদ্বন্দ্বী বিশ্ব শক্তির মধ্যে একটি অনিশ্চিত ভারসাম্যমূলক পদক্ষেপে বাধ্য করে।
আরও পড়ুন: