ঢাকা শুক্রবার, ১৮ জুলাই ২০২৫ 

হাবিবসহ পাঁচ কর্মকর্তার নির্দেশেই পুলিশের গুলি

ঢাকা এজ প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ১০:০৯, ১৫ জুলাই ২০২৫

শেয়ার

হাবিবসহ পাঁচ কর্মকর্তার নির্দেশেই পুলিশের গুলি

জুলাই অভ্যুত্থানের সময় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ক্ষমতায় রাখতে সংকল্পবদ্ধ হন ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের সাবেক কমিশনার হাবিবুর রহমান। ১৭ জুলাই থেকে ওয়্যারলেসের মাধ্যমে অধীনস্থদের সর্বোচ্চ বল প্রয়োগের মাধ্যমে আন্দোলন দমনে গুলির নির্দেশ দেন। এই নির্দেশের পরিপ্রেক্ষিতে চূড়ান্ত নির্দেশ দেন তার অধীনস্থ চার কর্মকর্তা। তারা সবাই আইন ও সংবিধান লঙ্ঘন করে দায়িত্ব ও কর্তব্য ভুলে শেখ হাসিনার নির্দেশে আন্দোলন দমনের সর্বাত্মক চেষ্টা চালান।

রাজধানীর চানখাঁরপুলে ছয়জনকে হত্যার ঘটনায় মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় অভিযোগপত্রে এমন তথ্য উঠে এসেছে। ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে শেখ হাসিনার পতনের দিন ৫ আগস্ট চানখাঁরপুল এলাকায় শিক্ষার্থী শহীদ আনাসসহ ৬ জনকে নৃশংসভাবে গুলি করে হত্যা করা হয়।

সোমবার এ মামলায় সাবেক ডিএমপি কমিশনার হাবিবুর রহমানসহ আট আসামির বিচার শুরুর আদেশ দিয়েছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বে তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল-১ সোমবার আসামিদের অব্যাহতির আবেদন খারিজ করে দিয়ে তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন। ট্রাইব্যুনালের অপর দুই সদস্য হলেন বিচারপতি মো. শফিউল আলম মাহমুদ এবং অবসরপ্রাপ্ত জেলা ও দায়রা জজ মো. মোহিতুল হক এনাম চৌধুরী। ট্রাইব্যুনাল বলেন, এ মামলা থেকে আসামিদের অব্যাহতির আবেদন বাতিল করা হলো। গত বছরের ৫ আগস্ট রাজধানীর চানখাঁরপুল এলাকায় ছয়জনকে গুলি করে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় তাদের বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ গঠন করা হলো।

মামলায় গ্রেফতার চার আসামি নিজেদের নির্দোষ দাবি করেছেন। একজন আসামি বলেন, ঘটনার দিন তার দায়িত্ব চানখাঁরপুল এলাকায় ছিল না। তিনি শাহবাগ এলাকায় দায়িত্বে ছিলেন। আগামী ১০ আগস্ট এ মামলায় প্রসিকিউশনের সূচনা বক্তব্য উপস্থাপন এবং ১১ আগস্ট সাক্ষ্যগ্রহণের দিন ধার্য করা হয়েছে।

অভিযোগপত্রে বলা হয়, শেখ হাসিনার আস্থাভাজন হাবিবুর রহমান ৫ আগস্ট ভোর পাঁচটার দিকে শাহবাগ থানায় উপস্থিত হয়ে উপস্থিত পুলিশ সদস্যদের যে কোনো মূল্যে আন্দোলন দমনে বিভিন্ন নির্দেশনা প্রদান করেন। তার নির্দেশনা বাস্তবায়ন করেন ডিএমপির তৎকালীন যুগ্ম কমিশনার সুদীপ কুমার চক্রবর্তী, অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার শাহ আলম মো. আখতারুল ইসলাম, সহকারী পুলিশ কমিশনার মোহাম্মদ ইমরুল ও পুলিশ পরিদর্শক মো. আরশাদ হোসেন। তাদের নির্দেশ মোতাবেক ওইদিন চানখাঁরপুল এলাকায় বিপুলসংখ্যক পুলিশ মোতায়েন করা হয়, যেন আন্দোলনকারীরা কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের দিকে অগ্রসর না হতে পারে।

অভিযোগপত্রে আরও বলা হয়, এই পাঁচ পুলিশ কর্মকর্তার নির্দেশে কনস্টেবল সুজন হোসেন, ইমাজ হোসেন ইমন ও নাসিরুল ইসলাম প্রাণঘাতী চাইনিজ রাইফেল দিয়ে আন্দোলনকারীদের লক্ষ্য করে গুলি করেন। এতে শহীদ হন শিক্ষার্থী শাহরিয়ার খান আনাস, শেখ মাহদি হাসান জুনায়েদ, মো ইয়াকুব, মো. রাকিব হাওলাদার, মো. ইসমামুল হক এবং মানিক মিয়া।

সোমবার এ মামলায় গ্রেফতার চার আসামি শাহবাগ থানার সাবেক পুলিশ পরিদর্শক আরশাদ হোসেন, কনস্টেবল মো. সুজন, কনস্টেবল ইমাজ হোসেন ইমন ও কনস্টেবল নাসিরুল ইসলামকে অভিযোগ গঠনের শুনানিতে হাজির করা হয়। বাকি চার আসামি ঢাকা মহানগর ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের সাবেক কমিশনার হাবিবুর রহমান, সাবেক যুগ্ম কমিশনার সুদীপ কুমার চক্রবর্তী, রমনা অঞ্চলের সাবেক অতিরিক্ত উপকমিশনার শাহ আলম মো. আখতারুল ইসলাম এবং রমনা অঞ্চলের সাবেক সহকারী কমিশনার মোহাম্মদ ইমরুলকে পলাতক দেখিয়ে এ মামলার বিচার কাজ চলবে।

novelonlite28
umchltd