আঞ্জুমান মেহজাবিন, একজন প্রতিষ্ঠিত কন্টেন্ট ক্রিয়েটর ও সামাজিক মাধ্যমে প্রভাবশালী ব্যক্তিত্ব, যিনি বাংলাদেশের বিভিন্ন প্ল্যাটফর্মে লক্ষাধিক ফলোয়ার অর্জন করেছেন। TikTok, Facebook, YouTube, এবং Instagram সহ নানা মাধ্যমে তার সৃজনশীল কন্টেন্টের মাধ্যমে তিনি তরুণদের কাছে জনপ্রিয়। সচেতনতা তৈরির কাজেও তিনি নিজেকে নিয়োজিত রেখেছেন, যা তাকে শুধু বিনোদন জগতে নয়, সমাজসেবাতেও প্রশংসিত করেছে।
সম্প্রতি তিনি দেশের বন্যাক্রান্ত অঞ্চলে ত্রাণ সহায়তা প্রদান করেন এবং এর কিছু মুহূর্ত সামাজিক মাধ্যমে শেয়ার করেন। তবে, তার এই মহৎ উদ্যোগের প্রশংসার পাশাপাশি কিছু সমালোচনা ও নেতিবাচক প্রতিক্রিয়া দেখা যায়। কিছু নেটিজেন অভিযোগ করেন, আঞ্জুমান মেহজাবিন শুধুমাত্র নিজের প্রচারের উদ্দেশ্যে এসব সাহায্য কার্যক্রম করছেন, এবং এর পেছনে মানবিক কোনো উদ্দেশ্য নেই।
সমালোচনার মুখে আঞ্জুমান মেহজাবিনের প্রতিক্রিয়া: সমালোচনাকে এড়িয়ে না গিয়ে, আঞ্জুমান মেহজাবিন নিজের অবস্থান পরিষ্কার করেন এবং একটি সাহসী প্রতিক্রিয়া দেন। তিনি সামাজিক মাধ্যমে বলেন, “গোপনে দান করা অত্যন্ত প্রশংসনীয়, এবং আমি বিশ্বাস করি যে আল্লাহ সেই দানকে মূল্যবান হিসেবে গণ্য করেন। তবে, প্রকাশ্যে দান করাও একটি ভালো কাজ হতে পারে যদি এর মাধ্যমে অন্যদের অনুপ্রাণিত করা যায়।”
তিনি আরও যোগ করেন, “কিছু মানুষ যখন আমার ভালো কাজেও নেতিবাচকতা খোঁজে, তখন আমি ব্যথিত হই। তবে আমি মনে করি, ভালো কাজ প্রকাশ্যে করলে যদি অন্যদের সাহায্য ও উৎসাহিত করা যায়, তাতে কোনো ভুল নেই। ছোটবেলায় আমার শিক্ষাগুরু আমাকে শিখিয়েছিলেন, নিজের ভালো কাজের কথা নিজেকেই বলতে হয়। আমি যা করি, তা গর্বের সঙ্গে করি, কারণ আমি কারো ক্ষতি করছি না বরং মানুষের উপকার করছি।”
আঞ্জুমান মেহজাবিন আরও উল্লেখ করেন, “আমি অত্যন্ত দুঃখিত যখন দেখি, কিছু মানুষ আমার ভালো কাজের মাঝেও নেতিবাচকতা খুঁজে বের করে। তারা মনে করে আমি এই কাজগুলো শুধুমাত্র লোক দেখানোর জন্য করছি। আমি তাদের উদ্দেশ্যে বলতে চাই, আমরা কেউই নিখুঁত নই। ছোটবেলায় আমার স্যার আমাকে শিখিয়েছিলেন, নিজের ঢোল নিজেকেই বাজাতে হবে; অন্য কেউ তোমার ঢোল বাজাবে না। তাই, আমি যা করি প্রকাশ্যে করি। আমি তো কোনো অন্যায় করছি না, বরং মানুষের উপকার করছি।”
নেতিবাচক সমালোচনার মুখেও অবিচল: আঞ্জুমান মেহজাবিন তার সমালোচকদের উদ্দেশ্যে বলেন, “কিছু মানুষের স্বভাব হলো সব সময় অন্যের কাজের মধ্যে ত্রুটি খোঁজা। তারা নিজেদের কোনো উন্নতি করতে না পেরে, অন্যকে সমালোচনা করে। আল্লাহ আমাদের সঠিক পথ দেখান এবং ভালো কাজ করার তাওফিক দিন।”
এই সাহসী বক্তব্যের মাধ্যমে তিনি তার ফলোয়ারদের সমর্থনের জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন এবং নেতিবাচক মন্তব্যকারীদের জন্য শুভ কামনা করেন। তার প্রতিক্রিয়া সমাজের বিভিন্ন স্তরে প্রশংসা কুড়িয়েছে এবং অনেকেই তার স্পষ্ট বক্তব্যকে বাহবা জানিয়েছেন।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নেতিবাচকতার মুখোমুখি হয়ে এগিয়ে যাওয়া: আঞ্জুমান মেহজাবিনের প্রতিক্রিয়া কেবল একজন কন্টেন্ট ক্রিয়েটরের সামাজিক দায়িত্ববোধই নয়, বরং নেতিবাচকতার মোকাবিলায় তার সাহসিকতারও পরিচয় দেয়। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সমালোচনা, বিদ্রূপ ও বুলিংয়ের মতো সমস্যাগুলো বর্তমানে একটি গুরুত্বপূর্ণ আলোচনার বিষয়বস্তু হয়ে দাঁড়িয়েছে। আঞ্জুমান মেহজাবিন তার কাজের প্রতি দৃঢ় থেকেছেন এবং সমাজের জন্য কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন।
তার এই অবস্থান প্রমাণ করে যে, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সমালোচনা ও নেতিবাচক মন্তব্য সত্ত্বেও সঠিক পথে চলতে পারলে মানুষকে ভালো কাজে অনুপ্রাণিত করা সম্ভব।
আরও পড়ুন: