ডিবি হেফাজতে মৃত্যু : নির্যাতন করে মারার অভিযোগ
ঢাকা এজ প্রতিবেদক
প্রকাশিত : ১২:৪৮ এএম, ২২ নভেম্বর ২০২৫ শনিবার
রাজধানীর মিরপুরের পল্লবী এলাকায় যুবদলের সদস্য সচিব গোলাম কিবরিয়া হত্যার ঘটনায় মোক্তার হোসেন নামে এক ব্যক্তিকে বৃহস্পতিবার আটক করেছিল ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। শুক্রবার সকালে ডিবি হেফাজতে থাকা অবস্থায় ওই ব্যক্তির মৃত্যু হয়। নিহত ব্যক্তির ছেলের অভিযোগ, তার বাবাকে পল্লবী থানায় এবং ডিবি কার্যালয়ে নির্যাতন করে হত্যা করা হয়েছে। পুলিশের পক্ষ থেকে যদিও তা অস্বীকার করা হয়েছে।
শুক্রবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নিয়ে আসা হয় মোক্তার হোসেনকে (৪০)। কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
ঢাকা মেডিকেলের মর্গে গিয়ে দেখা যায়, মোক্তার হোসেনের মরদেহ ঘিরে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাসহ পুলিশের একাধিক টিম কড়া নিরাপত্তা বেষ্টনী তৈরি করে রেখেছে। মর্গের ভেতরে কাউকে ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে না। সেখানে ঢাকা জেলার একজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের উপস্থিতিতে মোক্তারের সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি করা হয়। তার স্ত্রী ও সন্তান সুরতহাল প্রতিবেদনে স্বাক্ষর করতে অস্বীকৃতি জানান।
ডিবি হেফাজতে মারা যাওয়ার বিষয়টি স্বীকার করে ঢাকা মহানগর পুলিশ শুক্রবার দুপুরে বিজ্ঞপ্তি দিয়ে গণমাধ্যমকে জানায়, মোক্তার হোসেনকে আটকের সময় তিনি পালানোর চেষ্টা করেন। এ কারণে স্থানীয় লোকজন ধরে তাকে মারধর করেন। পরে তাকে ডিবি কার্যালয়ে নেওয়া হয়। রাতে অসুস্থ বোধ করলে মোক্তারকে ঢাকা মেডিকেলে নেওয়া হয় এবং চিকিৎসা দেওয়ার পর আবার ডিবি কার্যালয়ে নেওয়া হয়। আজ সকাল ১০টায় নাশতার জন্য ডাকাডাকি করলে তার কোনো সাড়া না পেয়ে তাকে আবার ঢাকা মেডিকেলে নেওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
মোক্তার হোসেনের মৃত্যুর পর ঢাকা মেডিকেলে আসা তার ছেলে মৃদুল সাংবাদিকদের কাছে দাবি করেন, আটকের পর প্রথমে পল্লবী থানার কনফারেন্স রুমে নিয়ে নির্যাতন করা হয় মোক্তারকে। নির্যাতনের ফলে তার বাবার মৃত্যু হয়েছে বলে দাবি করেন তিনি। এ সময় ঢাকা মহানগর ডিবি পুলিশের কর্মকর্তারা সেখানে উপস্থিত ছিলেন। গণমাধ্যমকর্মীরা তাদের বক্তব্য চাইলেও এ বিষয়ে তারা কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।
নিহত মোক্তারের ছেলে মৃদুল জানান, বৃহস্পতিবার দুপুর ২টা থেকে ৩টার মধ্যে পল্লবীতে তাদের বাসার সামনের চায়ের দোকান থেকে কয়েকজন লোক মোক্তারকে ধরে দ্রুত গাড়িতে তুলে ফেলেন। জানতে পেরে তিনি এবং তার মা সেখানে আসেন। তারা দেখতে পান মোক্তারকে একটি মাইক্রোবাসের ভেতরে মারধর করা হচ্ছে। এর কিছুক্ষণ পর মৃদুলকেও আরেকটি গাড়িতে তুলে নেওয়া হয়। সেখান থেকে তাদের নেওয়া হয় পল্লবী থানার কনফারেন্স রুমে। সেখানে বাবা-ছেলে দুজনকেই মারধর করেন ডিবি পুলিশের সদস্যরা।
