Deprecated: str_replace(): Passing null to parameter #3 ($subject) of type array|string is deprecated in /home/ph4m74q3/public_html/common/config.php on line 186
নুসরাত ফারিয়াকে নিয়ে সরকারে অন্তর্দাহ

নুসরাত ফারিয়াকে নিয়ে সরকারে ‘অন্তর্দাহ’

ঢাকা এজ প্রতিবেদক

প্রকাশিত : ০১:৪২ এএম, ২০ মে ২০২৫ মঙ্গলবার

হত্যাচেষ্টা মামলায় ঢাকাই সিনেমার আলোচিত নায়িকা নুসরাত ফারিয়াকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন আদালত। সোমবার সকালে রাষ্ট্র ও আসামিপক্ষের শুনানি শেষে এ আদেশ দেন ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট সারাহ ফারজানা হক। 
এরপর তাকে গাজীপুরের কাশিমপুর মহিলা কেন্দ্রীয় কারাগারে নেওয়া হয়েছে। তার জামিন বিষয়ে শুনানির জন্য ২২ মে দিন ঠিক করেছেন আদালত। এদিকে নুসরাত ফারিয়াকে হত্যাচেষ্টা মামলায় আসামি করা এবং গ্রেফতারের ঘটনায় সরকারের দু-একজন উপদেষ্টার অন্তর্দাহ স্পষ্ট হচ্ছে তাদের বক্তব্যে। 

তারা বলছেন, নুসরাতের গ্রেফতার আমাদের কাছে বিব্রতকর ঘটনা হয়ে থাকল। আর বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের ছাত্রনেতারা বলছেন, এগুলো বিচার নয়, এগুলো হাসিনা স্টাইলে মনোযোগ ডাইভারশন।

রোববার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে আটক করা হয় একটি চলচ্চিত্রে শেখ হাসিনার চরিত্রে অভিনয় করা নায়িকা নুসরাত ফারিয়াকে। 

গ্রেফতারি পরোয়ানা থাকায় দেশ ছাড়ার সময় তাকে আটকে দেয় ইমিগ্রেশন পুলিশ। পরে তাকে ডিএমপির গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) কাছে হস্তান্তর করা হয়। বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে হত্যাচেষ্টার অভিযোগে ভাটারা থানায় হওয়া এক মামলার এজাহারনামীয় আসামি নুসরাত। 

ডিবিতে অভিনেত্রীকে জিজ্ঞাসাবাদ শেষে সোমবার সকালে তাকে ঢাকার সিএমএম আদালতের হাজতখানায় আনা হয়। সকাল ১০টার পর নুসরাত ফারিয়াকে আদালতের কাঠগড়ায় ওঠানোর জন্য হাজতখানা থেকে বের করে আনা হয়। তার মাথায় ছিল পুলিশের হেলমেট। পরেছিলেন বুলেটপ্র“ফ জ্যাকেট। নারী পুলিশ সদস্যদের উপস্থিতিতে কড়া পাহারায় নুসরাত সিঁড়ি দিয়ে দ্বিতীয়তলায় ওঠেন। 

এ সময় অভিনেত্রীকে কারাগারে আটক রাখার আবেদন করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা। অন্যদিকে নুসরাত ফারিয়ার পক্ষে তার আইনজীবী ফারহান মোহাম্মদ আরাভ, মোর্শেদ আলম শাহিন জামিন চেয়ে আবেদন করেন। 

শুনানিতে ফারহান মোহাম্মদ আরাভ বলেন, তিনি একজন স্বনামধন্য অভিনেত্রী। আন্দোলনের আগে ৯ জুলাই শুটিং করতে কানাডায় যান। সেখান থেকে তিনি ১৪ আগস্ট দেশে ফিরে আসেন। সেই কাগজপত্র আমরা জমা দিয়েছি। তিনি আন্দোলনের সপক্ষে ছিলেন, পোস্টও দিয়েছিলেন। এ ঘটনার সঙ্গে তার বিন্দুমাত্র সম্পৃক্ততা নেই। তিনি আওয়ামী লীগের সঙ্গে সম্পৃক্ত নন। তার জামিনের প্রার্থনা করছি।

মোর্শেদ আলম শাহিন বলেন, তিনি চলচ্চিত্রজগতের উজ্জ্বল নক্ষত্র। ঘটনার সময় দেশে ছিলেন না, বিদেশে ছিলেন। তাকে এ মামলায় গ্রেফতার দেখানো আইনের পরিপন্থি। তার বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনি একটি চলচ্চিত্রে অভিনয় করেছিলেন। তাদের কাজ হলো ভুলত্রুটি তুলে ধরা। সেটাই তিনি করেছেন। তাকে উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে মামলায় জড়িত করা হয়েছে। আস্থার সর্বশেষ স্থল আদালত। যেকোনো শর্তে জামিনের প্রার্থনা করছি। তিনি শারীরিকভাবেও অসুস্থ।

রাষ্ট্রপক্ষে ঢাকা মহানগর পাবলিক প্রসিকিউটর ওমর ফারুক ফারুকী জামিনের বিরোধিতা করেন। তিনি বলেন, নুসরাত ফারিয়া একজন মডেল ও নায়িকা। তিনি এজাহারনামীয় আসামি। 

আসামিপক্ষের আইনজীবীরা বলছেন, তিনি জননন্দিত, স্বনামধন্য নায়িকা। আরেকজন স্বনামধন্য নায়ক আছেন ফেরদৌস। আমরা তাকেও খুঁজছি। তিনি ঢাকা-১০ আসন থেকে নির্বাচন করেছিলেন।

ওমর ফারুক বলেন, নুসরাত ফারিয়া শেখ মুজিবুর রহমানের বায়োপিকে হাসিনার চরিত্রে অভিনয় করেছেন। অভিনয় দোষের কিছু না। কিন্তু তিনি যে বক্তব্য দিয়েছেন, তা দোষের। তিনি বলেছেন, প্রতিটি ঘরে একজন হাসিনা রয়েছে। মানে প্রতিটি ঘরে ফ্যাসিস্ট রয়েছে। প্রতিটি ঘরের মেয়েরা কি ফ্যাসিস্ট? এ ধরনের বক্তব্য উসকানিমূলক। হাসিনাকে খুশি করতে বক্তব্য রেখেছেন। ফ্যাসিস্টের পক্ষে কথা বলতে উদ্বুদ্ধ করেছেন। গত নির্বাচনে আওয়ামী লীগের হয়ে সংরক্ষিত আসনে প্রার্থী হতে জোর প্রচেষ্টা চালিয়েছিলেন।

রাষ্ট্রপক্ষের এ আইনজীবী বলেন, নাট্যকার, অভিনেতা, অভিনেত্রী-তারা সবাই একটা গোষ্ঠী হয়ে ১৫ বছর সহযোগিতা করেছেন। আন্দোলন দমাতে, হত্যা করতে হাসিনা যে নির্দেশ দিয়েছিলেন, অভিনেতা-অভিনেত্রীরা যে কোনো স্থান থেকে সহযোগিতা করেছেন। তাদের মধ্যে নুসরাত ফারিয়া একজন। তিনি হামলার সঙ্গে সম্পৃক্ত। তাকে গ্রেফতার করতে খুঁজছিল পুলিশ। এয়ারপোর্টে তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে।