ঢাকা শুক্রবার, ১৭ মে ২০২৪ 

মিসাইল, হাজারো গ্রেনেডসহ কলম্বিয়ায় লাখ লাখ বুলেট চুরি

অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশিত: ১০:২১, ১ মে ২০২৪

শেয়ার

মিসাইল, হাজারো গ্রেনেডসহ কলম্বিয়ায় লাখ লাখ বুলেট চুরি

বেশ কয়েকটি ক্ষেপণাস্ত্রের পাশাপাশি হাজার হাজার গ্রেনেড এবং লাখ লাখ বুলেট হারিয়ে ফেলেছে দক্ষিণ আমেরিকার দেশ কলম্বিয়ার সামরিক বাহিনী। দেশটির সামরিক ঘাঁটিগুলোতে পরিদর্শনের পর এই তথ্য সামনে এসেছে।

অভিযোগ উঠেছে, দেশটির সামরিক বাহিনীর সদস্যরা চুরি করে এসব অস্ত্রশস্ত্র বিক্রি করে দিয়েছে। বুধবার (১ মে) পৃথক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা রয়টার্স এবং সংবাদমাধ্যম বিবিসি।

বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, কলম্বিয়ার সেনাবাহিনী লাখ লাখ বুলেট, হাজার হাজার গ্রেনেড এবং বেশ কিছু ক্ষেপণাস্ত্র হারিয়ে ফেলেছে বলে দেশটির প্রেসিডেন্ট গুস্তাভো পেট্রো জানিয়েছেন।
— Reuters (@Reuters) April 30, 2024

তিনি বলেছেন, সাম্প্রতিক সময়ে সামরিক ঘাঁটিগুলোতে পরিদর্শনের সময় এসব অস্ত্রশস্ত্র নিখোঁজ হওয়ার বিষয়টি প্রকাশ্যে এসেছে।

এসব জিনিস নিখোঁজের জন্য অভ্যন্তরীণ দুর্নীতিকে দায়ী করে তিনি বলেছেন, সামরিক বাহিনীর কর্মীরা অস্ত্র ব্যবসায়ীদের কাছে এসব অস্ত্র বিক্রি করেছে। অন্যদিকে কলম্বিয়ার প্রতিরক্ষামন্ত্রী বলেছেন, অস্ত্রশস্ত্র নিখোঁজের বিষয়ে তদন্ত চলছে।

প্রেসিডেন্ট গুস্তাভো পেট্রো মঙ্গলবার এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ‘এই ধরনের ঘাটতি ব্যাখ্যা করার একমাত্র উপায় হলো- সশস্ত্র বাহিনীর ভেতরের বিভিন্ন লোক এবং বেসামরিক ব্যক্তিদের নেটওয়ার্ক দীর্ঘকাল ধরে কলম্বিয়ান রাষ্ট্রের বৈধ অস্ত্র ব্যবহার করে অস্ত্রের ব্যাপক বাণিজ্যিকীকরণের জন্য নিবেদিত রয়েছে।’

তিনি বলেন, চলতি বছরের ১২ ফেব্রুয়ারি এবং ১ এপ্রিল যথাক্রমে টোলেমাইদা এবং লা গুয়াজিরা নামের দুটি সামরিক ঘাঁটিতে আকস্মিক পরিদর্শনের সময় এসব অস্ত্র নিখোঁজ হওয়ার বিষয়টি প্রকাশ্যে আসে।

এর মধ্যে টোলেমাইদা সামরিক ঘাঁটিতে অফিশিয়াল রেকর্ডের তুলনায় ৮ লাখ ৮ হাজারেরও বেশি বুলেট এবং প্রায় ১০ হাজার গ্রেনেডের ঘাটতি পাওয়া গেছে। অন্যদিকে লা গুয়াজিরা ঘাঁটিতে প্রায় ৪২ লাখ বুলেট এবং ৯ হাজার ৩০০টিরও বেশি গ্রেনেডের বিষয়ে অসঙ্গতি পাওয়া গেছে।

প্রেসিডেন্ট পেট্রো আরও বলেছেন, এই সামরিক ঘাঁটি থেকে দুটি স্পাইক ক্ষেপণাস্ত্র, ৩৭টি নিমরোড ক্ষেপণাস্ত্র এবং ৫৫০টি রকেট চালিত গ্রেনেডও হারিয়ে গেছে।

তিনি সাংবাদিকদের বলেন, সামরিক এসব অস্ত্রশস্ত্র কলম্বিয়ার মধ্যে সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোকে দেওয়া হতে পারে, আবার এটি হাইতি বা আন্তর্জাতিক কালো বাজারে পাচার করাও হয়ে থাকতে পারে।

কলম্বিয়ার এই প্রেসিডেন্ট বলেন, ‘সবচেয়ে দুঃখের বিষয় হলো- এই একই অস্ত্রগুলো সামরিক বাহিনীর একই সদস্যদের আহত ও হত্যা করছে।’

উল্লেখ্য, কলম্বিয়ায় সরকারি বাহিনী, বামপন্থি গেরিলা গোষ্ঠী এবং ডানপন্থি আধাসামরিক বাহিনীর মধ্যে কয়েক দশক ধরে সংঘাত চলছে। দীর্ঘ এই সংঘাতে ৪ লাখ ৫০ হাজারেরও বেশি মানুষ নিহত হয়েছেন।
একই সময়ে কলম্বিয়ার সামরিক বাহিনীর সদস্যরা বেশ কয়েকটি দুর্নীতি এবং মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগেও দোষী সাব্যস্ত হয়েছেন।

কলম্বিয়ার প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইভান ভেলাসকুয়েজ একই সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন, নিখোঁজ অস্ত্রের আইটেমগুলোর বিষয়ে তদন্ত শুরু হয়েছে এবং কিছু কর্মকর্তাকে তাদের পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, সারা দেশে সামরিক ঘাঁটিগুলোতে আরও পরিদর্শনের পরিকল্পনা করা হচ্ছে।

প্রসঙ্গত, কলম্বিয়ার সামরিক বাহিনীকে এই অঞ্চলের দেশগুলোর মধ্যে অন্যতম সেরা সজ্জিত বাহিনী বলে মনে করা হয়। ড্রাগ কার্টেল মোকাবিলা করার জন্য দেশটির সামরিক বাহিনী যুক্তরাষ্ট্রের কাছ থেকে বিলিয়ন ডলার সহায়তা পেয়েছে।

novelonlite28
umchltd